সেদিন তখন বেশ বেলা হয়ে গিয়েছিল। পত্নী বাজার থেকে ফেরার পথে দেখলেন ফুলওলা তার শেষ গাছটি নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় বসে।
ছোট্ট টবে উপচে পড়া একটি ফুটফুটে গাছ, প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর। ধানের সাইজের সবুজ পাতা আর অজস্র ল্যাভেন্ডার রঙের গুঁড়ি গুঁড়ি ফুল। দেখলেই লোভ হয়। মনে মনে পরিকল্পনা ছকা হয়ে যায়, বাড়ির ঠিক কোনখানটিতে রাখা হলে যে আসবে তারই নজরে পড়বে অথচ চোরে নিতে পারবে না।
এসব ভাবতে ভাবতেই দেখলেন ফুলওলা একটি প্যাকেটে ভরে টবশুদ্ধু গাছটি তাঁর হাতে দিয়ে দিয়েছে। দশ টাকায় একটি বুনো ঘাসের গাছ নিয়ে বাড়িতে এসে অপূর্ব এক প্রসন্নতায় তাঁর মন ভরে গেল।
বিকেলে বাড়ি ফিরে আমি দেখলাম সুন্দরীকে। মনের সুধাপাত্র উপচে পড়লো যেন।
ম্যাগনিফায়িং গ্লাস থাকলে ভালো হতো, ফুলগুলি খুঁটিয়ে দেখা যেত।
সে আজ কয়েক বছর আগের কথা। এর মধ্যে একবার টব বদল করা ছাড়া ওর জন্য আর বিশেষ কিছুই করিনি। আজও অকৃপণ হাতে আমাদের মন ভরিয়ে চলেছে
আমাদের ছাদের ছোট্ট বেগুনী ফুল।
গাছটির নাম Mexican Heather বা Hawaiian Heather বা False Heather.
বৈজ্ঞানিক নাম Cuphea hyssopifolia.
পশ্চিমের দেশে হিথার ফোটে বছরে দুবার; শীত আসার মুখে মুখে আর গ্রীষ্মে। দিগন্তবিস্তৃত সবুজ মিডোর মাঝে সেলোসিয়ার মতো ফুল, লাল, হলুদ, গোলাপি, বেগুনি। সে হল আসল হিথার।
আমাদের এই নকল হিথার পাহাড়ি জায়গায় রডোডেনড্রন, এজালিয়া, ক্যামেলিয়া, গার্ডেনিয়া ইত্যাদি গাছের গোড়ার ছায়ায় শ্যাওলার মতো চাপ হয়ে ঝাঁক বেঁধে ফুটে থাকে ল্যাভেন্ডার রঙের এই ফুল। ওইসব গাছের বর্জ্য এর খাদ্য। সেজন্যই সেখানে নকল হিথারের ভিড়।


