জোরথাং এমনই একটা জায়গা যাকে প্রথম দর্শনেই ভালাে লেগে যায়। বাজার,
জনবসতি, দোকান সব মিলিয়ে মেল্লির পরেই দ্বিতীয় বড়াে শহর। সামনের ঝুলন্ত ব্রিজ
থেকে দু-দিকে তাকালে যেন ভুটান বলে ভ্রম হয়। আমরা চলেছি জোরথাং থেকে
ওখরের পথে।
পাহাড়ি পাকদণ্ডী পথ পেরিয়ে, প্রকৃতির অনবদ্য শােভা উপভােগ করতে
করতে যখন ওখরে এসে পৌছালাম তখন প্রায় বিকেল। কিন্তু চার পাশে বাড়ি ঘরের
চিহ্নমাত্র নেই। শুধুই পাহাড় সারি। ড্রাইভার বােধহয় মনের কথা আঁচ করে হাতের
ইশারায় পাহাড়ের ঢাল বেয়ে নিচে নেমে যাবার ইঙ্গিত দিল। তখনই চোখে পড়ল।
সবুজ সাইন বাের্ড যাতে লেখা সমদ্রুক হােমস্টে। দুপাশে বাঁশ গাছের সারির মধ্যে
দিয়ে পাথর কাটা সিঁড়ি পথে নিচে নেমে এলাম। হােমস্টে দেখে মনে হল কেউ বুঝি
আঠা দিয়ে পাহাড় গায়ে দেশলাই বাক্স সাঁটিয়ে দিয়েছে। সামনেই পাহাড়ি সবুজ উপত্যকা।
সরু ফিতের মতাে নদী, উঁচু পাহাড়ের মাথায় আটকে রয়েছে মেঘ-কুয়াশা। হােমস্টের
পিছনে আকাশের বুকে মাথা ছোঁয়ানাে পাইনের সারি। শুধুই কুজনের মধ্যে দাঁড়িয়ে
আমরা কটি প্রাণী। নিঃস্তব্ধ প্রকৃতি যে এত বাত্ময় জানতামই না। রাত গাঢ় হতে মনে
হলাে পৃথিবীর বাইরে কোনও স্থান থাকলে হয়তাে সেটি ওখরে-ওখরেই।
পরদিন সকালে ওখরে মনাষ্ট্রি দর্শন করে গাড়ি ছুটল দশ কিলােমিটার দূরে।
হিলের উদ্দেশ্যে। বুঝতেই পারছেন আমাদের অভিপ্রায়। প্রথমবার বার্সে রােডােড্রেনডন
স্যাঞ্চয়ারি দর্শন।
ছােটোখাটো ট্রেকিং-এর অভিজ্ঞতা লাভে উদগ্রীব আমাদের দলের দুই
যুবতী মহিলা সদস্য এবং বছর পাঁচেকের দুটি ক্ষুদে ট্রেকার। ফলে উৎসাহ উদ্দীপনা
চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হল হাঁটা। অনুমতি পত্র আগেই সংগহ
করা হয়েছে। এ রাস্তা সােজা বার্সে গুরুাস কুঞ্জে গেছে। পথ হারানাের সম্ভাবনা প্রায়
নেই। তাই গাইড ছাড়াই শুরু হল পথচলা। মাত্র সাড়ে চার কিলােমিটার, কিন্তু প্রতিটি
মুহূর্ত উপভােগ্য। এক পাশে পাহাড়, উল্টোদিকে ঢাল। সেখানে পাইন, দেওদার,
রােডােড্রেনডন গাছের সঘন উপস্থিতি। আকাশ কখনও নীল, কখনও বা মেঘাচ্ছন্ন।
মাঝে মাঝে গাছ-গাছালির ফাক দিয়ে হুহু শব্দে বয়ে যাচ্ছে বাতাস, ঘন কুয়াশার মতাে।
মেঘকে সঙ্গী করে। গড়ে তুলছে ভৌতিক আবহ। সামনের দু-ফুট আগের ব্যক্তিকেও
দেখা যাচ্ছে না। আবার হঠাৎই রবি কিরণে ঝলমলিয়ে উঠছে চর্তুদিক। পাতার ফাঁক
দিয়ে রৌদ্রকিরণ রাস্তায় পড়ে তৈরি করছে বাঘবন্দী খেলার ছক। মে মাসের দ্বিতীয়
সপ্তাহ, তাই লাল গুরাস নেই। তবে সাদা, হালকা হলুদ রােডাের দেখা পেয়েছি
যথেষ্ট।
এছাড়া বহু বর্ণের নাম না জানা পাহাড়ি ফুল লাল-গােলাপী রােডােড্রেনডনের
অভাব পূরণ করেছে। সিঙ্গালিলা অভয়ারণ্যের মধ্যে অবস্থিত এ জঙ্গলে মেলে হিমালয়ান
ব্ল্যাক বিয়ার, বার্কিং ডিয়ার, ঘােরাল, স্নাে লেপার্ড, বুনো শুয়াের এবং বিরল রেড
পান্ডা। পাখি পাওয়া যায় হরেক রকমের। কালিজ, ট্রাগােলান, স্কারলেট মিনিভেট ইত্যাদি
হাজারাে রঙের, বিভিন্ন প্রজাতির। এছাড়া আছে দুষ্প্রাপ্য কিছু ফুল, প্রজাপতি ও অর্কিড।
আছে বিভিন্ন প্রজাতির বাঁশ যা ভালুকের প্রিয় খাদ্য। মাত্র সাড়ে চার কিলােমিটার
পথকে প্রকৃতি যেন অকৃপণ দানে ভরিয়ে রেখেছে। শীত শেষে মার্চ-এপ্রিলে যে এ
অঞ্চলে ফুলের রঙে বিস্ফোরণ ঘটে তা বেশ বােঝা গেল। বার্সে ঢােকার আগে বা
হাতে চোখে পড়ল ছােট্ট বুদ্ধমূর্তি। দুদিন আগেই বুদ্ধ পূর্ণিমা গেছে, পড়ে রয়েছে
পূজার উপাচার। সামনেই সবুজ পাথুরে ঘাসে ঢাকা লনে দৃষ্টিনন্দন গুরাসকুঞ্জ। এর
অবস্থান যে সর্বোত্তম স্থানে তা বলাই বাহুল্য। আমাদের বুকিং বার্সে ফরেস্ট ব্যারাকে।
এটিও কোনও অংশে কম নয়। প্রায় ত্রিশজনের ব্যারাকে আমরা আটজন। মধ্যাহ্ন
ভােজ সেরে ক্যামেরা হাতে বার্সে চষে ফেললাম, তােলা হল প্রচুর ছবি।
অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পাহাড় প্রেমীরা রঙিন তাঁবু খাটিয়েছে এখানে। গুরাসকুঞ্জেও পর্যটক ভালই। সবাই
বাঙালি। আলাপ-পরিচয়ও হল কয়েকজনের সঙ্গে। রাত সাড়ে আটটার মধ্যে রাতের
খাওয়া সাঙ্গ হল, ফরেস্ট ব্যারাকের কেয়ারটেকার গােপাল থাপা (পুসাইজির) হাতে
দেশি মুরগীর গরম ঝােল আর রুটি সহযােগে। অসাধারণ সে স্বাদু খাদ্য গ্রহণের পর
মন উচাটন হল একটু বাইরে বেরিয়ে প্রকৃতি উপভােগের। দরজা খুলে বাইরে আসতেই
প্রথমে দারুণ ঠাণ্ডা অনুভূত হল। কিন্তু সেটা সয়ে যেতেই সৌন্দর্যের এক অদ্ভুত ওম্ গ্রাস করল সকলকে। মাথার ওপর মেঘমুক্ত আকাশ। ১০,২০০ ফিট উচ্চতা থেকে
দেখা তারাগুলি যেন টোকা দিলেই খসে পড়বে তার গােল থালার মতাে সামান্য ম্লান
বিগত যৌবনা চাঁদ। তার রূপের ছটা চোখ ধাঁধিয়ে দিতে না পারলেও আলােকিত
করেছে তামাম চরাচর। মাঝে মাঝে ডেকে উঠছে রাতচরা পাখিরা। তাদের সুরেলা
কণ্ঠের অনুরণন ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে-বাতাসে-পাহাড়ে, নিঃশব্দ-নিঃঝুম সমগ্র জগৎ।
প্রকৃতি বুঝি এমনই নেশা ধরায়, ঘাের লাগায় দু-চোখে, মানুষকে বিবাগী-বাউন্ডুলে
করে। আজ সকালে প্রাতঃরাশ সেরে বার্সে বিদায়ের পালা। বেশিরভাগই বেরিয়ে পড়েছেন
চেনা পথে অর্থাৎ হিলের উদ্দেশ্যে। জনা ছয়েক যুবা ট্রেকার যাবে বার্সে থেকে
ফোকতেদাড়া হয়ে সিঙ্গালিলা পাস অতিক্রম করে ফালুটের দিকে। আর আমরা টানা
উতরাই পথে নামব বুড়িয়াখােপে। ছয় কিলােমিটার রাস্তা পুরােটাই প্রায় জঙ্গলে। বার্সে
ছেড়ে খানিক নামতেই প্রবেশ করলাম গহন অরণ্যে। গাইড গােপাল থাপা। আমরা
থাকব ওঁরই বাড়িতে, বুড়িয়াখােপে। রাস্তা ক্রমশই হ্রস্ব থেকে হ্রস্বতর। কোনও কোনও
জায়গায় বড় বড় শিলাখণ্ড এমনই পথ রােধ করেছে দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে আর
বুঝি যাবার পথই নেই। পাইন, ওক, দেওদার, ধূপির এতই সঘন উপস্থিতি যে সূর্যালােক
কোথাও কোথাও তা ভেদ করতে পারেনি। আর্দ্র, স্যাতস্যাতে পাথুরে মাটিতে বেসামাল
হচ্ছি একাধিকবার। পাহাড়ের বুক চিরে খলখলিয়ে নেমেছে ঝরণা, চলেছে খাড়াই
খাদের দিকে আপন খেয়ালে। শ্যাওলা ধরা গাছের গুড়ি ফেলে তৈরি কাঠের সেতু
দিয়ে সংযােগ রক্ষা করা হয়েছে। টলােমলাে পায়ে তা পেরিয়ে আবার শুরু হয়েছে।
হাঁটা। খােরতর জঙ্গল ট্রেক বলতে যা বােঝায় এও ঠিক তাই। ট্রেকাররাও কদাচিৎ এ
পথ ব্যবহার করে। পুসাই জী জানালেন এ রাস্তা শুধু গ্রামবাসীদের জন্যই। সে সংখ্যাও
হাতে গােনা। কেই বা অপ্রয়ােজনে বুড়িয়া খােপ থেকে বার্সে উঠতে যাবে। এ রাস্তায়
ফুলস্লিব জামা, প্যান্ট আবশ্যক। পথ চলতি গাছপালার এতটাই বাড়বৃদ্ধি যে প্রতি
মুহূর্তেই শরীর স্পর্শ করে। বৃষ্টি হলে এ পথ অগম্য। আমরা এসেছি মনের জোরে
আর পুসাইজীর আন্তরিক আহ্বানে। ওঁর প্রতি দুর্বলতার অন্যতম কারণ এটাই যে
সদাশয়, মিষ্টভাষী এই মানুষটি আজ ভাের পাঁচটায় আমাদের ঘুম ভাঙিয়েছেন কাঞ্চনজঙ্ঘা
দেখার জন্য।
ধর চূড়াে পরে তীব্র ঠাণ্ডায় বাইরে এসে বারুদ্ধ হয়েছি সকলে। শুধু
কাঞ্চনজঙঘাই নয় একেবারে সপার্ষদ। রাথােং, কুম্ভকর্ণ, কারু, কোকাং, নসিম, পাণ্ডিম
সহ বিশাল-বিস্তৃত এক ঘুমন্ত বুদ্ধ রেঞ্জ। ঝকঝকে ভােরের আলােয় আলােকিত ভারতের
সর্বোচ্চ শৃঙ্গ এবং অন্যান্য বাকি শিখর গুলি। মুগ্ধতার আবেশ যেন কাটতেই চাইছিল।
তারও তাল কেটেছে পুসাইজির তাড়ায়। সত্যি কথা বলতে ওর গল্পগাছা আর।
তাড়নাতেই এই গভীর বনাঞ্চল ঘণ্টা চারেকের মধ্যে পেরােতে পেরেছি। শেষের দু-
কিলােমিটার হাঁটু বিদ্রোহ করে, এতটাই পথ নিম্নগামী। অস্বস্তিকর হয়ে ওটে ধাপে
ধাপে পাথুরে সামঞ্জস্যহীন সিঁড়িগুলি। তবে সব কষ্টের অবসান হল পুসাইজির
বুড়িয়াখােপের বাড়ির উঠানে পা দিয়ে। গড়ে তুলেছেন ছােট্ট সবুজ একটি হােমস্টে।
আজ রাতে আমাদের আস্তানা। বাড়িতে রয়েছে একাধিক গরু, ছাগল, দিশি মুরগী। দুধ
ও ডিম বিক্রি এ পরিবারের মূল রােজগারের উৎস। পাহাড়ের ঢালে ফলেছে ভুট্টা,
এলাচ, রাইশাক, বাঁধাকপি, আলুর মতাে সবজি। স্ত্রী, কলেজে পড়া মেয়ে, বয়স্কা দিদিকে
নিয়ে পুসাইজির ভরাভর্তি সুখের সংসার। সেখানে আমরাই অনাহুত। তবে অতিথি
আপ্যায়নে ত্রুটি হল না এতটুকু। নেপালী রেসিপিতে তৈরি মােমাে-নুডুলস্ বাদ গেল
না কিছুই।
পুসাইজি আঙ্গুল তুলে বােঝাচ্ছিলেন বুড়িয়াখােপের ভৌগলিক অবস্থানগত
গুরুত্ব। দেখালেন দার্জিলিং, মানেভঞ্জন, হিলে-বার্সে পাহাড়, চোপলেটি ভিউপয়েন্ট
ইত্যাদি। ভবিষ্যতে যে বুড়িয়াখােপের গুরুত্ব অনেক বাড়তে চলেছে তা বেশ বােঝা
গেল। রাতে বুড়িয়াখােপ হয়ে উঠেছিল আরও মায়াময়। দূরের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝিকিমিকি
জুলা জোনাকির মতাে আলাে, উপভােগ্য ঠাণ্ডা আর গালগল্প জমে উঠল দারুণ। যদি
কোথাও খামতি থাকে তা পূর্ণ করে দিলেন পুসাইজির দিদি, রেডিওতে নেপালী লােকগান
চালিয়ে। তিনি নিজে তাে হাততালি দিয়ে নাচতে শুরু করলেনই ডাকলেন পরিবারের
সব সদস্য-সদস্যাদের, সর্বোপরি আহ্বান জানালেন আমাদের। এতটাই আন্তরিক ও
উদাত্ত ছিল সে আহ্বান যে, প্রাথমিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে আমরাও সকলে যােগ দিলাম।
সে সমবেত নৃত্যে। তাল না মেলাতে পারলেও আনন্দ করেছি মন-প্রাণ ভরে। কিছুক্ষণের
জন্য মুছে গিয়েছিল ভাষা ও অবস্থানগত ব্যবধান।
আজ সকালে পুসাইজির থেকে বিদায় নেবার পালা। লটবহর নিয়ে দু-পা হেঁটে
নিচে নামতেই দেখি দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। পুসাইজি আমাদের সঙ্গে যাবেন সামনেই
রােজিবাজার অব্দি। বুড়িয়াখােপের নিকটস্থ বাজার এটিই। পুসাইজি বারবার অনুরােধ
করলেন তার হােমস্টের কথা সমতলে ফিরে গিয়ে ঘনিষ্ঠজনদের বলার জন্য। সম্ভব
হলে কোনও ভ্রমণ সংক্রান্ত পত্রিকায় লেখা ও ছবির দেবার জন্য। আমরাও কথা
দিলাম সাধ্যমতাে চেষ্টা করার। এতক্ষণ গাড়ি চলছিল হেলেদুলে পাথুরে কঁাচা রাস্তায়।
দেখলাম সিকিম সরকারের উদ্যোগে চলছে বিরাট কর্মযজ্ঞ | আর্থমুভার, বুলডােজার
দিয়ে পাহাড়ের শরীর থেকে হাড়-মাস খসিয়ে চলছে উন্নয়ন, তৈরি হচ্ছে পাকা রাস্তা
বুড়িয়া খােপ অব্দি। রােজী বাজারের পাকা রাস্তা থেকে আমাদের গাড়ি এখন ছুটে
চলেছে সােরেং হয়ে কালুক, রিনচেনপং, হি-পাতালের দিকে। যেতে যেতে মনে হল
হয়তাে পাঁচ-সাত বছর বাদে এই বুড়িয়া খােপকে আর চিনতেই পারব না। আবার
শঙ্কিতও হলাম এই ভাবনায় যে মানুষগুলােও এমন থাকবে তাে? কাচা নরম মাটির ?
নাকি আধুনিকতার রাসায়নিক রঙের পোঁচ এদেরও গড়ে তুলবে আমাদের মতাে করেই।
তীব্র পেশাদার, হৃদয়হীন এবং আত্মকেন্দ্রিক।
প্রয়ােজনীয় তথ্য :
বার্সে রডােড্রেনডন স্যাধুয়ারী জুন থেকে সেপ্টেম্বর অবধি বন্ধ থাকে।
কীভাবে যাবেন / কোথায় থাকবেন :
শিয়ালদহ, হাওড়া, কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনে এনজেপি। বিমানে এলে
বাগডােগরা। দুটি জায়গা থেকেই জোরথাং যাবার গাড়ি পাবেন। আর এসএনটি বাসস্ট্যান্ড
এবং শিলিগুড়ি পায়েল সিনেমা হলের সামনে থেকে শেয়ার জিপ ছাড়ে জোরথাং
যাবার জন্য, ১২০০-১৫০০ টাকায়। এনজেপি থেকে সরাসরি জোরথাং হয়ে ওখরে
আসতে চাইলে গাড়ি পাবেন তবে ড্রাইভারের সঙ্গে ভালভাবে কথা বলে নেবেন।
অনেকেই ওখরের রাস্তা ভাল চেনে না। এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালাে হােমস্টেতে বলে
রাখা গাড়ির জন্য। ওখরে-জোরথাং-এনজেপি ভাড়া পড়বে ৫০০০ থেকে ৫৫০০ টাকা।
সমদ্রুক হােমস্টে পাসাং দোরজি শেরপা ৯৭৩৩২২০৯৮০ / ৮০০১৮৪৩৩০৮। সমস্ত
গাড়ির ব্যবস্থা উনিই করে দেন। ওখরে থেকে ১০ কিলােমিটার দূরে হিলে।
ওখরে থেকে হিলে হয়ে হাঁটা পথে পৌঁছে যান বার্সে রডােড্রেনডন স্যাঞ্চুয়ারি
৪ কিলােমিটার হাঁটাপথ। বার্সেতে গুরাসকুঞ্জে থাকতে পারেন, ৯৮৩২০০৫৭০৩। তবে
এখানে ৪০- শয্যার ডর্মেটরি এবং দুটি দ্বি-শয্যার ডর্মেটরি আছে। (অ্যাটাচড বাথসহ)
অন্য বুকিং না থাকলে কেয়ার টেকার গােপাল থাপা (পুসাই) সমস্তটাই উন্মুক্ত করে
দেন পর্যটকদের সুবিধার্থে। হিলে থেকে ভার্সে জনপ্রিয় রুট। সময় একটু কম লাগে
ভার্সে পৌছাতে। ফলে সকাল সকাল হাঁটা শুরু করে ভার্সে ঘুরে ঐদিনই নেমে আসেন
বহু পর্যটক। তবে একদিন ভার্সেতে রাত কাটানাে এক মনােরম অভিজ্ঞতা। ভার্সেতে
বিদ্যুৎ পরিষেবা নেই, সােলারই ভরসা অথবা মােমবাতি। মােবাইলে টাওয়ার পেতে
ভীষণ সমস্যা হয়। গুরাসকুঞ্জে জলের সমস্যা আছে। ভার্সে ফরেস্ট ব্যারাক এবং
বুড়িয়াখখাপ থাকার জন্য ফোন করতে পারেন গােপাল থাপাকে (পুসাই)
০৯৭৩৩৪১২৮০৭ /০৯৫৪৭২১৯৩০৫, ওনার মেয়ে পদ্মা থাপার ফোন –
০৮৩৭২৮২৩৫৭। এছাড়া হিলেতে থাকতে পারেন রেড পাণ্ডা লজে- সামদেন শেরপা
৯৪৭৫৯১৯৭১৪ / ৭৫৫১৮৭৮৯৪৫। আর সরাসরি বুড়িয়াখােপে আসতে চাইলে
এনজেপি থেকে জোরথাং গাড়ি বদলে নয়াবাজার জুমবস্তি – সােরেং – দোদক –
রােজিবাজার-বুড়িয়াখােপ। মনে রাখবেন জোরথাং পৌছাতে হলে সকাল সকাল,
বেলা বাড়লে বিশেষ করে দুপুর গড়িয়ে গেলে সব জায়গাতেই যাবার গাড়ি অমিল
হয়ে পড়ে।
অমিত কুমার দাস।