আজ একটা অন্য বিষয় নিয়ে লিখছি। একটি নুতন ধূমকেতু। যদিও ফেসবুক হওয়াটস এপের বিশেষজ্ঞরা এই ব্যাপারে কোন কথা সেভাবে বলেননি তবুও এক দুটি পোস্ট পেয়েছি ধূমকেতুটি সম্পর্কে। তাই আমার বন্ধুদের জন্য কিছু তথ্য দিচ্ছি। ধূমকেতু কি ও কেন সেই বিষয়ে বলছিনা।
তবে ধূমকেতু প্রধানত দুই ধরনের হয়। পিরিয়ডিক বা যাকে একটা নির্দিষ্ট সময় পরে দেখা যায়। যেমন হ্যালীর ধূমকেতু। প্রতি ৭৫ বছরে একবার দেখা যায়। শেষ দেখা গেছে ১৯৮৬ সালে। এদের অর্বিট ইলিপটিক্যাল বা ডিমের মত। অন্য প্রাকার ধূমকেতু হল নন পিরিয়ডিক বা এরা একবার দেখা দিয়ে উধাও হয়ে যায়। আবার দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এদের অর্বিট প্যারাবলিক বা হাই প্যার্বলিক।
আমাদের আজকের আলোচ্য ধূমকেতু হল একটি নন পিরিয়ডিক ধূমকেতু। এর অর্বিট প্যারাবলিক। জুলাই মাসের তিন তারিখ থেকে উত্তর পূর্ব আকাশে দেখা গেছে ঠিক সূর্য উঠার আগে। গত দুদিন থেকে সন্ধ্যার আকাশে দেখা যাচ্ছে উত্তর পশ্চিম দিগন্তের কাছে এবং খালি চোখে। বেশ উজ্জ্বল ধূমকেতু। জুলাই মাসের শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যার আকাশে দেখা যাবে সপ্তর্ষি মন্ডলের খানিকটা নীচে। যারা সপ্তর্ষি মন্ডলের সাথে পরিচিত তাদের সমস্যা নেই। যারা চেনেন না তারা পোলস্টার বা ধ্রুবতারা থেকে নিজেদের বা দিকে তাকালে পরপর দুটি তারা ও তাদের উপরদিকে আরো পাঁচটি তারা দেখতে পাবেন। মনে হবে একটা লোক ডিগবাজী খেতে চাইছে। এটাই সপ্তর্ষি মন্ডল।
ধূমকেতুটির নাম C/2020 F3 (NEOWISE) or comet NEOWISE. সাধারণত একটা ধূমকেতুর নাম হয় তার আবিষ্কর্তার নাম অনুসারে। যেমন হ্যালী, হায়াকুতাকে, হেল বপ ইত্যাদি। বর্তমান ধূমকেতুটি আবিষ্কৃত হয়েছে 2020 সালের মার্চ মাসের 27 তারিখ বা দ্বিতীয় পক্ষে তাই তার কোড নাম C/2020 F3 পোষাকী নাম NEOWISE. NEOWISE বা Wide-field Infrared Survey Explorer হল একটি স্পেস টেলিস্কোপ যা ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে মহাকাশ পাঠিয়েছে নাসা। এই টেলিস্কোপটি মাঝে মাঝে বন্ধ করে ও মাঝে মাঝে চালিয়ে রাখা হয় তার চালিকাশক্তি ধরে রাখার জন্যে। এই স্পেস টেলিস্কোপ সৌরজগতের বাইরে অনেক অনু গ্রহের সন্ধান দিয়েছে।
NEOWISE এর সাহায্যে বর্তমান ধূমকেতুটি আবিষ্কার করা হয়েছে তাই তার নাম (NEOWISE) or comet NEOWISE. ১৯৯৭ সালের ধূমকেতু হেল-বপের পর এটাই প্রথম নেকেড আই কমেট বা খালি চোখে দৃশ্য ধূমকেতু । আজ থেকে ধূমকেতুটি ধীরে ধীরে দিগন্ত রেখা থেকে উপর দিকে উঠবে। জুলাই মাসের শেষে সূর্যাস্তের পর ঘন্টা খানেক বা তার বেশি সময় ধরে দেখা যাবে। ধূমকেতুর সৌন্দর্য তার লেজে। এখন একটা হাল্কা নীল রঙের লেজ যা গ্যাসের তৈরি সেটা দেখা যাচ্ছে। পৃথিবী থেকে দশমিক ৬৭ সৌর দূরত্বে রয়েছে। অর্থাৎ পৃথিবীর অনেকটা কাছে রয়েছে। ধূমকেতুটি দেখার জন্য একটা খালি মাঠ পেলে ভালো হয়। তা না হলে কোন উচুঁ বাড়ির ছাদ যেখান থেকে উত্তর পশ্চিম দিগন্ত দেখা দেখা যায় সেখান থেকে তাকালে দেখা যাবে।
আজয় নাথ