অশ্বত্থ গাছের বৈজ্ঞানিক নাম – Focu sreligiosa সংস্কৃত নাম অশ্বত্থ, ইংরাজী নাম Sacred fig হিন্দী—পিপল, পিপলি।অশ্বথ গাছ সাধারণত জীর্ণ বৃক্ষকোটরে চারাগাছ জন্মগ্রহণ করবার পর প্রথমতঃ শাখা বা পত্রপল্লব বিস্তার না করে শিকড় ও তার শাখা প্রশাখা গুলিতে ক্রমশঃ নীচের দিকে প্রসারিত
করতে থাকে এবং দু-এক বছরের মধ্যেই মাটির নাগাল পেয়ে ক্রমশ স্ফীত ও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
শিকড়ঃ এই শিকড় বা ঝুরিগুলি অনেক ক্ষেত্রে পরস্পর জড়াজড়ি করে কন্ডের আকার ধারন করে।
প্রতি বছরই এদের পাতা ঝরে পড়ে এবং বসন্তের প্রারম্ভে নতুন মুকুল গজায়। পাতাগুলো দেখতে অনেকটা গাছ পানের মতো কিন্তু আকারে অনেকটা ছোট।
পাতাঃ পাতার মধ্যশিরার দুপাশে উপশিরাগুলি সমান্তরালে বিস্তৃত। বোঁটাগুলি বেশ লম্বা।
বোটার গোড়ার দিকে জোড়ায় জোড়ায় ক্ষুদ্রাকৃতির ফল ধরে।
ভারতের প্রায় সব জায়গায়।অযত্নে বর্ধিত বা পথের পাশে রোপিত অশ্বথ গাছ দেখতে পাওয়া যায়। বীজ অথবা কলম থেকে নতুন গাছ উৎপন্ন হয়ে থাকে।
হিন্দু ও বৌদ্ধরা এই গাছকে পবিত্র বলে মনে করে। খাদ্যের দুষ্প্রাপ্যতা ঘটলে কোনও কোন অঞ্চলে এদের ফল এবং কচি পাতা খাদ্য রূপে ব্যবহৃত হয়।
অশ্বত্থের ফলঃ পাখিরা প্রচুর পরিমাণে অশ্বত্থের ফল উদরস্থত করে থাকে। শুষ্ক ফলের বাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে এতে ৯.৯৯% জীষ পদার্থ, ৭.৯% অ্যালুমুনিয়নের, ৫.৩% তৈলাক্ত পদার্্ ৩৪.৯% কার্বোহাইড্রেট, ৭.৫% রঞ্জক পদার্, ৮.৩% ছাই,১.৮৫%সিলিকা এবং ০.৬৯% ফসফরাস আছে।
পাতার গুনাগুনঃ সাধারণ ঘাস অপেক্ষা এদের পাতায় দুই তিনগুণ বেশি প্রোটিন পাওয়া যায়। শুটি জাতীয় পশু খাদ্য অপেক্ষা এদের পাতায় দুই- তিনগুন বেশি চুন জাতীয় পদার্থ আছে। অবশ্য পাতার পুষ্টিকর পদার্থ বেশি থাকলেও অন্যান্য পশুখাদ্য অপেক্ষা সেগুলি দুষ্প্রাপ্য।
এই গাছের কর্তিত স্থান থেকে একরকম খাদ্য রস নির্গত হয়। এতে ০.৭% থেকে ৫.১% রবার জাতীয় পদার্থ পাওয়া যায়।
অশ্বত্থ গাছের কাঠ ঃঅশ্বত্থ গাছের কাঠ সাধারণত প্যাকিং এর কাজে ব্যবহৃত হয়। এই গাছের ছালে প্রায় ৪% ট্যানিন পাওয়া যায় এবং এ বেশ ঝাঁঝালাে। এই ছালের চর্মরােগে ও ক্ষতস্থানে ব্যবহার করা হয়। জলের সাহায্যে এই ছাল হতে নিষ্কাশিত পদার্থে স্ট্যাফাইলােকক্কাস অনিয়াস ও ই, কোলাই ব্যাক্টেরিয়া দমনে সক্রিয় অংশাহণ করে। অশ্বত্থ গাছের পাতা ও কচি মুকুল চর্মরােগ ও কোষ্ঠবদ্ধতা দূরীকরণের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
শৈলকুমার গুহ
বিজ্ঞান অন্বেষক এর জুলাই 2011 থেকে সংগৃহীত।