কমতে কমতে তাদের বাসস্থানের আর ৪৩.৩৮ শতাংশ পড়ে আছে আমাদের দেশে। জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-র হিসেবে আর ২০৫০-এর মধ্যে তাদের সংখ্যা নব্বই শতাংশ হ্রাস পাবে। এইভাবে যদি তাদের বাসস্থান ধ্বংস চলতে থাকে।

মালায়ান জায়ান্ট স্কুইরেল(Malayan Giant Squirrel) নিয়ে একটি লেখা লিখেছিলাম কয়েকমাস আগে আমার কলামে। মাননীয় পাঠকদের হয়তো মনে আছে। ভারতবর্ষের তথা পৃথিবীর বৃহৎ কাঠবিড়ালিদের মধ্যে অন্যতম। ‘জায়ান্ট স্কুইরেল’ বা ‘দৈত্য কাঠবিড়ালি’ আমাদের দেশে আরো দু-রকমের আছে। মালাবার জায়ান্ট স্কুইরেল ও গ্রিজলি জায়ান্ট স্কুইরেল। তবে তারা মধ্য ও দক্ষিণ ভারতের বাসিন্দা। মালায়ান জায়ান্ট স্কুইরেল আপতত দেখা মেলে পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ ও নাগাল্যান্ডে। বিজ্ঞানীরা বলেন ওরা একটা জঙ্গলের স্বাস্থ্য সূচক। ওরা ভালো থাকলে জঙ্গল ভালো আছে। না থাকলে নেই। তাই ওদের অস্তিত্ব সংকট মানে ভারতবর্ষের বন-জঙ্গলের অস্তিত্ব সংকট।
জুলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া-র বিজ্ঞানীরা তাদের এই সংকটের প্রধান কারন হিসেবে উল্লেখ করেছেন জঙ্গল ধ্বংস করে মানুষের ক্রমবর্ধমান বসতি ও চাষ-আবাদের ব্যাপক বিস্তার। ফলস্বরূপ ওদের বাসস্থান নষ্ট হচ্ছে। ২০৫০-এর কাছাকাছি ওদের বাসস্থান তিন শতাংশের কাছে গিয়ে ঠেকবে।



গত দু-দশকে আমাদের দেশে মালায়ান জায়ান্ট স্কুইরেল-দের সংখ্যা তিরিশ শতাংশ কমেছে। ওদিকে উত্তর-পূর্ব ভারতে ১৯৮৭ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বনাঞ্চল ৭১৭২ বর্গ কিমি বাড়লেও তারপরের দু-বছরে ৬২৮ বর্গ কিমি হ্রাস পেয়েছে। তার প্রভাব ভয়ঙ্কর ভাবে পড়ছে মালায়ান জায়ান্ট স্কুইরেলদের ওপর। সেই সাথে জঙ্গলের ভেতর রাস্তা তৈরি করে তাদের বসতি খন্ডিত হচ্ছে নিয়মিত। তার ওপর রয়েছে চোরাশিকার ও ঝুম চাষ। খুব তাড়াতাড়ি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা না নিলে ওরা হারিয়ে যাবে চিরতরে আমাদের দেশ থেকে।
লেখা ও ছবি – সম্রাট সরকার
ইমেল – samratswagata11@gmail.com